স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভা এলাকায় পুলিশী অভিযান না থাকায় মাদকের রমরমা ব্যবসায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে অভিভাবক মহল। হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে মরণ নেশাা গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা ও হেরোইন।
এতে যুবসমাজ মাদক সেবন করে বিপথগামী হচ্ছে। জড়িয়ে পড়ছে চুরি, ছিনতাই ব্ল্যাকমেইলসহ ঘুনের মতো জঘন্য অপরাধে। প্রশাসনের অবহেলার কারণে এলাকার কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। প্রকাশ্যে বিক্রি করছে এবং হেরোইন, ইয়াবা ও ফেন্সিডিলসহ নানা বাহারী মাদকদ্রব্য। আর এইসব মদকদ্রব্য খুচরা ও পাইকারী বিক্রয় করে লাখ লাখ টাকার পাহাড় গড়ে তুলছে।
অভিযোগ উঠেছে, মাদক ব্যবসায়ীরা এই সকল অবৈধ মাদকদ্রব্য বিক্রি করছেস্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভা এবং গোয়ালকান্দি ইউনিয়নে মাদক ব্যবসায়ীদের আস্তানা গড়ে উঠেছে। এতে করে মাদকাসক্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। মাদকের নেশায় তলিয়ে যাচ্ছে ছাত্র-যুবক তথা তরুণ প্রজন্ম। ধংশ হয়ে যাচ্ছে ভবিষ্যত প্রজন্ম।
বর্তমানে ইয়াবা, হেরোইন ও ফেনসিডিলের দিকে নজর মাদক সেবিদের। উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত শ্রেণীর হাজারো কিশোর-যুবক আশক্ত হয়ে পড়ছে মাদকে। এছাড়া মাদক ব্যবসায়ীরা মোবাইল ফোনে মাদকের অর্ডার নিয়ে বিভিন্ন যায়গায় ভ্রাম্যমান হিসেবে তাদের ছোট বড় ছেলে-মেয়েদের দিয়ে পৌঁছে দিচ্ছে মাদক।
কৌশলে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে চালাচ্ছে মাদকের রমরমা ব্যবসা।
আর বিভিন্ন রকমের নেশা সেবনের জন্য নিম্ন আয়ের মাদক সেবীরা নেশার টাকা যোগাড় করতে না পেরে তাহেরপুর বাজারের বিভিন্ন দোকান-বাড়ীর তালা ভেঙ্গে মূল্যবান জিনিষ, নগদ অর্থ, গরু-ছাগল, বাইসাইকেল, ভ্যানগাড়ি দিনে দুপুরে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে। চুরির মালামালের পরিবর্তে সামান্য কিছু টাকা আর মাদক দিয়ে কিনে নিচ্ছে মাদক ব্যবসায়ীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জনপ্রতিনিধি জানান, করোনা কালিন সময়ে সাজুড়িয়া গ্রামের কুখ্যাত মাদক সেবী লেড আজাদকে হেরোইন ও ইয়াবাসহ তাহেরপুর ফাঁড়ি পুলিশ গ্রেফতার করে অর্থের বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে। এছাড়া রামরামা হাজরা পুকুর গ্রামের সুবদেও ছেলে গাঁজা ব্যবসায়ী সনাতনকে তাহেরপুর ফাঁড়ি পুলিশ গ্রেফতার করে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়েছে বলেও আভিযোগ রয়েছে তাহেরপুর ফাড়ির আইসি এসআই রাসেলের বিরুদ্ধে। এছাড়া পুঠিয়া থানাধীন তেবাড়িয়া ইউনিয়নের শিলমাড়িয়া গ্রামের মোঃ আতাউর রহমানের ছেলে মোঃ ইমন (১৭) নামের এক কিশোরকে ১০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগও রয়েছে তাহেরপুর ফাঁড়ির বিরুদ্ধে। তাহেরপুর পুলিশ ফাঁড়ির নাকের ডগায় মাদকের ব্যবসা করছে বর্তমানে রামরামা খয়রাতী পাড়ার নেংরা বাচ্চু, জামলয়ের মাদক ব্যবসায়ী সামাদ, গোয়ালকান্দী ইউপির আবেদ আলীর ছেলে মোঃ রাজু আলী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাহের পুর বাজারের কয়েকজন দোকানী বলেন, তাহেরপুর বাজারে অসুস্থ গরু-ছাগল জবাই করে কশাইরা। আর এর জন্য প্রত্যেক শুক্রবারে এক হাজার করে টাকা দিতে হয় ফাঁড়িতে। এই সকল অনিয়ম হলেও প্রকাশ্যে কথা বলার কেউ নাই। অপরাধিদের সাথে সখ্য রয়েছে পুলিশের ভয় কিসের।
তবে সব মিলে এলাকার অভিভাবক মহল আগামী প্রজন্মকে রক্ষায় উদ্বেগ আর উৎকন্ঠার মধ্যে রয়েছে। তাদের দাবি মাদক ব্যবসা বন্ধসহ তাহেরপুর ফাঁড়িতে দির্ঘদির ধরে থাকা পুলিশ সদস্যদের বদলি করা হোক। এ বিষয়ে সদ্য যোগদানকৃত রাজশাহী পুলিশ সুপার-এর সূদৃষ্টি কামনা করছেন স্থানীয়রা।
জানতে চাইলে তাহেরপুর পুলিশ ফাঁড়ির আইসি এসআই রাসেল সকল অভিযোগ অস্বিকার করে জানান, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। অভিযান চলছে। কোন মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড় দেয়া হবেনা। এ নিয়ে স্থানীয়দের সহযোগীতা চেয়েছি বলেও জানান ওই এসআই।
মতিহার বার্তা ডট কম – ১৩ অক্টোবর ২০২০
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.